ঘুরে আসুন হিমালয়ের বুকে ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম সামথার থেকে
Kalimpong জেলার Samthar, CHARKHOL, North Bengal Tourism, offbeat North Bengal, Lolegao
উত্তরবঙ্গে কালিম্পং জেলার অন্তর্ভুক্ত একটি পরিস্কার পরিছন্ন কোলাহল মুক্ত পাহাড়ী গ্রাম "সামথার" যে গ্রামটিকে উত্তরাখণ্ডের বিনসরের সঙ্গে তুলনা করে বলা হয় উত্তরবঙ্গের " বিনসর"। প্রাকৃতিক প্রাচুর্যে ভরা এই গ্রামটিকে কেন বিনসর বলা হয় নীচে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে উল্লেখ করা আছে।
✅পাইন, ওক, শাল ইত্যাদি বিভিন্ন নামি দামী গাছের ঘন জঙ্গলে ঘেরা এই সামথার খাসমহল রাজ্যের লোলেগাওন বনদপ্তর দ্বারা সংরক্ষিত। একদমই জংলী জানোয়ারের উপদ্রব নেই, কিন্তু একসময় লেপার্ড, হরিণ এই জঙ্গলে ভালো সংখ্যায় ছিল।
কমলালেবুর চাষ ডিসেম্বর মাস নাগাদ
✅জঙ্গলে আনাচে কানাচে বিভিন্ন অর্কিড, ফার্ন, নানা রঙের ফুলের বাহার যা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে দেখতে পাওয়া যাবে।
✅ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে সুন্দর পিচের রাস্তা, কোথায় কোথায় সূর্যের আলো পর্যন্ত প্রবেশ করেনি আবার কিছু কিছু জায়গায় রাস্তা ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে। যারা জঙ্গলের রাস্তায় হেঁটে বেড়াতে ভালো বাসেন তাদের জন্য খুবই আদর্শ এই জায়গাটি।এখানকার জঙ্গলের রাস্তায় নিশ্চিন্তে ট্রেকিং করতে পারেন যেখানে গাড়ি, জন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। আর বন্য জন্তু একদমই নেই।
✅এই জঙ্গলের রাস্তার মধ্যেই পড়বে একটি পাহাড়ী সুন্দর ঝর্ণা" মন্দিরখোলা",
এই ঝর্ণার জলই হচ্ছে ৫-৬টি গ্রামের মানুষের জীবন।
✅ হিমালয়ান বার্ড🐦: লাল, নীল নানা রঙের প্রচুর হিমালয়ান বার্ড, বিখ্যাত পাহাড়ি ময়না এই অঞ্চলে আছে এবং এদের খুব কাছ থেকেই দেখতে পাওয়া যায়, এদের শিসের আওয়াজ জঙ্গলের পরিবেশ কে আরও মোহময় করে তুলেছে।
✅🌅সূর্য্যদয়, 🌄সূর্যাস্ত আর কাঞ্চনজঙ্ঘা : মেঘমুক্ত দিনে জঙ্গলের মধ্যে থেকে পরিস্কার কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্যমান। সূর্যদয় এবং সূর্যাস্তের সময় অপরুপ রঙ্গীন কাঞ্চনজঙ্গার দৃশ্য যা আপনার মণিকোঠায় সারাজীবন থেকে যাবে।
আর একটি বিরল দৃশ্যর কথা না বললে তথ্য অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এই জায়গার ভৌগলিক অবস্থানের জন্য সূর্যাস্তের সময় একই সাথে রঙ্গীন কাঞ্চনজঙ্গা আর সূর্যাস্ত একই দিকে দৃশ্যমান। ঐ সময় আকাশ পুরোটাই সিঁদুর রঙে রঙিন হয়ে ওঠে, এ এক স্বপ্নের দৃশ্য যা রুমের ব্যালকনি থেকে দেখতে পাবেন।
ব্যালকানি থেকে কাঞ্চঝাঙ্ঘার অপূর্ব দৃশ্য
এখন বুঝতে পারছেন কেন একে উত্তরাখণ্ডের বিনসরের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
এই জায়গায় সব বয়সের সব মনস্কের মানুষরাই যেতে পারেন,যেমন
✅ যাঁরা ঘন জঙ্গলে ট্রেকিং করতে ভালোবাসেন তারা শহরের কোলাহল আর একঘেঁয়েমি থেকে মুক্তি পেতে পাহাড়ের এই সবুজ ঘন অরণ্যের মধ্যে কয়েক রাত্রি তাদের বেশ ভালই লাগবে।
✅যাঁরা ঘন অরণ্যের মধ্যে থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা, সূর্যোদয়, সূর্যাস্তের রঙিন স্বর্গীয় দৃশ্য ঘর থেকে উপভোগ করতে চান তাঁদের জন্য এটা অবশ্যই আদর্শ জায়গা, নিশ্চিত ভাবে বলা যেতে পারে।
✅ যাঁরা হিমালয়ান পাখি 🐦দেখতে ভালোবাসেন তাদের জন্য একদম উপযুক্ত জায়গা এবং ভোরের দিকে রুমের ব্যালকনিতে বসে এই পাখি গুলোকে দেখতে পাওয়া যায় খুব কাছ থেকে। সারাদিন এদের শিসের আওয়াজ আর জংগলের ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক আপনার দিন গুলি অত্যন্ত সুখকর করে তুলবে।
✅ শীতে বাগানে নানারকমের মরসুমী ফুল🏵️, বিভিন্ন জাতের🌹গোলাপ ফুল আর কালিম্পং এর বিখ্যাত গাছ ভর্তি আজেলিয়া ফুল এই জায়গাটি আপনার মনে এক অন্যরকম স্বর্গীয়অনুভুতি এনে দেবে।
✅ যাঁরা সিনিয়র সিটিজেন আছেন তাঁদের জন্য আমাদের হোম স্টে খুবই নিরাপদ,জংলের পিচের রাস্তায় নিশ্চিন্তে হেঁটে ঘুরে বেড়াতে পারেন। ঘরের ব্যালকনিতে বসে অপূর্ব গ্রীনভ্যালি আর সামনে কাঞ্চনজঙ্গার অপরূপ মনোরম দৃশ্য আপনার মনের সব গ্লানি দূর করে দেবে।
✅পাহাড়ে জঙ্গল ট্রেকিং জন্য কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের কাছে এটি একটি আকর্ষণীয় স্থান।
বর্তমানে সামথার - চারখোলে অনেক ছোট মাঝারি হোম স্টে আছে।
কিন্তু এক মাত্র আমাদের নিজস্ব প্রিমিয়াম কোয়ালিটির গ্রীন ক্যানভাসি আছে যা একদম ফরেস্ট অঞ্চলের মধ্যে সেটি হলো, এটি এবছরই তার যাত্রা শুরু করেছে প্রচুর মানুষের শুভেচ্ছা নিয়ে।
প্রতিটা রুম এবং সংলগ্ন ব্যালকনি থেকে ওপরে উল্লেখিত সব দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। অতিথিদের প্রাইভেসি এবং সিকিউরিটির জন্য গেস্ট হাউসের পুরো জায়গাটি ১০ft উচ্চতার ফেন্সিং দিয়ে ঘেরা। প্রতি টি ঘরে ২৪ঘণ্টা গরম জলের ব্যবস্থা আছে। পাওয়ার ব্যাক আপ এখানে সোলার সিস্টেম। ২০-২৫ জন এক সঙ্গে বসার মত বড় একটি ব্যালকনি সহ ডাইনিং হল আছে আর এখানকার খাবার পুরোপুরি বাঙালি স্বাদের, কিন্তু চাইলে পাহাড়ি মোমোও পেয়ে যাবেন।
বন🔥এর সুন্দর ব্যবস্থা আছে,চাইদা অনুযায়ী সন্ধেতে বন🔥 এর আয়োজন পরিবেশটাকে এক উচ্চমাত্রায় পৌঁছে দেয়।
উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে এইরকম অনেক অজানা তথ্য লুকিয়ে আছে। আশা করা যায় দিনে দিনে এরকম অনেক অজানা তথ্য উন্মোচন হবে।
✅সুবিধার্থে কিছু তথ্য উল্লখ রইল
⚫এখানকার পাহাড়ি উচ্চতা ৪৫০০ ft এর মত।
⚫🚔 NJP রেল স্টেশন থেকে মাত্র ২ ঘণ্টার রাস্তা(৭৫km)
⚫এখানে থেকে খুব সহজেই 🚔 কালিম্পং সিটি, ডেলো পাহাড়,রিষপ, লোলেগাও, নোকরদারা, সমালবং ঘুরে আসতে পারেন। হেঁটে চারখোল, সামথার ঘুরে বেড়াতে পারেন।
⚫আমাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল:
https://www.youtube.com/@Greencanvas2023
কি ভাবে যাবেন? 🚙
শিলিগুড়ি থেকে ২ ঘন্টা যাত্রা করে মন্দিরখোলা পৌঁছে যাওয়া যায়। শিলিগুড়ি থেকে কালিমপং যাওয়ার রাস্তা ধরে সেবক পেরোনোর পর কালিঝোরা আসবে। কালিঝোরা তে তিস্তা নদীর উপরে ড্যাম দিয়ে "মন্দিরখোলা" সামথার আসতে হবে। এই পথে প্রথমে পানবু, ইয়াং মাকুম তারপর সামথার আসবে। রাস্তা টাও বেশ ভালো, তবে বুকিং কোরে না আসলে কালিঝোরা ড্যাম দিয়ে সিকিউরিটি আসতে দেবে না।
মন্দিরখোলাতে তে কোথায় থাকবেন? 🏠
জঙ্গলের মধ্যে শুধুমাত্র গ্রীন ক্যানভাস-এই থাকার ব্যবস্থা আছে। গাড়ি Green Canvas পর্যন্ত যায়, সুতরাং হাঁটার কোনো ব্যাপার নেই। গ্রীন ক্যানভাসে গেস্ট দের জন্য সব রকম আধুনিক সুব্যবস্থা রয়েছে। এখানে পুরো বিল্ডিংটাই RCC Construction । একটি রুমে তিনটি বেড আছে যেখানে ২-৩ জন অনায়াসে ঘুমোতে পারেন। অতিথিদের সুরক্ষাতে পুরো প্রপার্টিটাই ১০' উঁচু ফেন্সিং দিয়ে ঘেরা এবং ভিতরে খুব সুন্দর ফুলের বাগান আছে।
রুমের ব্যালকনি থেকেই খুব সুন্দর সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত - কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। রুমের ব্যালকনি থেকেই প্রচুর নানা রঙের ছোট ছোট হিমালয়ান পাখি দেখেই সময় কাটাতে পারেন।
কোথায় ঘুরবেন? 🚶🚶♀️
Green Canvas Retreat campus সংলগ্ন জঙ্গলের রাস্তায় নির্ভয়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াতে পারেন। শীতের সময় সামথার গ্রামে অরেঞ্জ ফার্ম হাউসে কমলালেবুর গাছে কমলালেবু দেখতে পাবেন।
এছাড়াও ঘোরার প্রচুর জায়গা আছে যেমন চারখোল,পানবু, সিনজি, যুগে ঝর্ণা, নকদাড়া, ডাবলিং। লাভা, লোলেগাঁও, রিশপ ও ঘুরে আসতে পারেন অথবা মন চাইলে কালিমপং শহর টাও ঘুরে আসতে পারেন।
যোগাযোগ 📞 9831258951/
অথবা mail করুন: debasishray1004@gmail.com
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল: https://www.youtube.com/@Greencanvas2023
গুগল ম্যাপ: https://maps.app.goo.gl/ZULe8DmG71yL6E9n8